কন্যাশ্রী প্রকল্প রচনা | কন্যাশ্রী প্রকল্প বাংলা রচনা | কন্যাশ্রী স্কিম রচনা | Kanyashree Prakalpa Essay in Bengali | Kanyashree Scheme Essay in Bangla | Konnashree Prokolpo Rochona | Kanyashree Prakalpa Rachana | Kanyashree Scheme Rochona in Bengali
কন্যাশ্রী প্রকল্প রচনা
ভূমিকা
এই বৃহৎ সমাজ সৃষ্টিতে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও সমান গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু সুদূর অতীতকাল থেকেই নারীরা তাদের প্রাপ্য মর্যাদা পায় নি। সমাজে নারীর স্থান সবার নীচে। শিক্ষা ও বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে নারীর প্রতি অবহেলা কিছুটা কমে এলেও এই চিত্র সর্বত্র দেখা যায় না। আজ ও দরিদ্র পরিবারে কন্যা সন্তান জন্ম নিলে পিতা-মাতা দুশ্চিন্তায় নিমগ্ন হয়ে পড়েন৷ এই দুশ্চিন্তার দিকে নজর রেখে পশ্চিমবঙ্গ সরকার শুরু করেছেন “কন্যাশ্রী প্রকল্প”।
প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
কন্যাশ্রী প্রকল্পের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নানা লক্ষ্য রয়েছে। সেগুলি হল—
১। মেয়েদের বাল্যবিবাহ রোধ করা।
২। নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধি করা।
৩। শিক্ষাক্ষেত্রে স্কুল ছুট-এর হার কমানো।
৪। নারীশিক্ষার জন্য আর্থিক সাহায্য প্রদান ইত্যাদি।
সমাজের সর্বাঙ্গীন অগ্রগতিতে মেয়েদের সামিল করতে ও সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং ভারসাম্য বজায় রাখতে এই প্রকল্পের অবদান অসামান্য।
কন্যাশ্রী প্রকল্প কী?
কন্যাশ্রী নামের মাধ্যমেই বোঝা যাচ্ছে অবিবাহিতা কন্যারাই এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। রাজ্য সরকার আর্থিক অনুদান দিয়ে মেধাবী দরিদ্র কন্যাদের শিক্ষার আলোয় আনতে উৎসাহী এই প্রকল্পের শর্তগুলি হল—
১। কন্যাকে ১৩-১৮ বছরের অবিবাহিতা হতে হবে।
২। প্রথমে পারিবারিক আয়ের উর্ধ্বসীমা ১ লক্ষ ২০ হাজার রাখা হলেও বর্তমানে কোনো আয়ের উৎসীমা নেই।
৩। পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক স্বীকৃত কোনো প্রতিষ্ঠানের ছাত্রী হতে হবে।
প্রকল্পের বিভাগ
কন্যাশ্রী প্রকল্প তিনটি ভাগে বিভক্ত। (K1), (K2) ও (K3)। ১৩-১৮ বছরের কন্যা (K1) এর অন্তর্ভুক্ত তারা বর্তমানে বার্ষিক ১০০০ টাকা করে পায়। ১৮ বছরের উর্ধে পাঠরত (K2) অবিবাহিতা কন্যা এককালীন ২৫০০০ টাকা পায়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করলে বার্ষিক ২৪০০০ টাকা পায়। এরা (K3) এর অন্তর্ভুক্ত।
সাফল্য ও আন্তর্জাতিক সম্মান
এই প্রকল্প বিশেষভাবে সফল হয়েছে। স্ত্রী শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। বাল্যবিবাহ অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। স্কুল ছুটের হার কমেছে। এইসব কারণে এই প্রকল্পের প্রশংসা শুধু দেশে নয়, বিশ্বেও ছড়িয়ে পড়েছে। ২০১৪ সালে ইউনাইটেড নেশনস পুরস্কার WSIS-16 ও ২০১৭ সালে নেদারল্যান্ডে ৬২টি দেশের ৫৫২ টি প্রকল্পের মধ্যে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে।
উপসংহার
কন্যাশ্রী প্রকল্পের ফলে নারী শিক্ষার অগ্রগতি ঘটেছে। ভবিষ্যতে যাতে এই প্রকল্প আরও সাফল্য লাভ করতে পারে তার জন্য সকলকে আগ্রহী হতে হবে। আমাদের সকলের উচিত এই মহান প্রকল্পের উদ্দেশ্যকে সফল করে তোলা। কারণ নারীর শিক্ষা ও সম্মান বৃদ্ধি পেলে তবেই জাতি ওসমাজের উন্নতি সম্ভব।