মহাত্মা গান্ধী রচনা | মহাত্মা গান্ধী বাংলা রচনা | Mahatma Gandhi Essay in Bengali | মোহনদাস করমচান্দ গান্ধী রচনা | মহাত্মা গান্ধীর বিষয়ে রচনা | গান্ধীজীর বিষয়ে রচনা | বাপুজীর বিষয়ে রচনা | জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর রচনা | Mahatma Gandhi Essay | Mohandas Karamchand Gandhi Essay in Bengali | Gandhiji Essay in Bengali | Bapuji Essay in Bengali | Father of the Nation Essay in Bengali | Mahatma Gandhi Bangla Essay
মহাত্মা গান্ধী রচনা
ভূমিকা
পরাধীন ভারতবর্ষকে ইংরেজদের অধিন থেকে মুক্ত করতে যে মানুষেরা নিজেদের জীবন সপে দিয়েছিলেন, মহাত্মা গান্ধী তাদের অগ্রদূত নিরস্ত্র ভারতবাসিকে সঙ্গে নিয়ে তিনি স্বাধীনতা আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছিলেন। ভারতবাসিকে তিনি এক নবমন্ত্রে দীক্ষিত করেছিলেন। তাই তিনি জাতির জনক শুধু ভারতবর্ষ কেন সারা বিশ্বের তিনি একজন মহা মানব।
জন্ম ও শিক্ষা
মহাত্মা গান্ধী 1869 সালে ২ অক্টোবর গুজরাটের পোরবন্দর গ্রামে জন্মগ্রহন করেন ৷ তার পুরো নাম মোহন দাস করম চাঁদ গান্ধী। তার পিতার নাম করমচাঁদ গান্ধী এবং মাতার নাম পুতলিবাই। ছোটবেলা থেকেই গান্ধীজী ছিল ধর্ম ও সত্যের প্রতি অনুরাগ। গান্ধীজীর শিক্ষা আরম্ভ হয় দেশীয় বিদ্যালয়ে। 10 বছর বয়সে রাজকোটের উচ্চ ইংরাজি বিদ্যালয়ে তার উচ্চ শিক্ষা শুরু এবং সতের বছর বয়সে প্রবেশিকা পরিক্ষায় উত্তীর্ন হয়ে ভবন নগরের শ্যামল দাস কলেজে ভর্তি হন। তার পর তিনি বিলেতে যান ব্যারিষ্টারি পড়তে। 1888 সালের 7 সেপ্টেম্বর মাত্র 1৪ বছর বয়সে ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য লন্ডন জান ৷ 1891 সালে লন্ডন থেকে ব্যারিস্টারি পাশকরে ভারতে ফেরেন।
কর্ম জীবন
ভারতে ফিরে তিনি মুম্বাই হাইকোর্টে ওকিলাতি শুরু করেন। এরপর তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার নাটালে যান ৷ সেখানে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের উপর ইংরেজদের অত্যাচার দেখে তার বিরুদ্ধে তিনি আন্দোলন শুরু করেন। দীর্ঘ 21 বছর নাটালে কাটিয়ে তিনি ভারতে ফিরে আসেন। ভারতে ফিরে তিনি ভারতবর্ষের স্বাধীনতার জন্য অহিংসা আন্দোলন গড়ে তোলেন।
এর পর তাঁর নেতৃত্বে অসহযোগ আন্দোলন, আইন অমান্য আন্দোলন, লবন সত্যাগ্রহ আন্দোলন ও ভারত ছার আন্দোলন গড়ে ওঠে। “তার করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে” স্লোগান সমস্ত দেশবাসিকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। তাঁর বিরামছিন সংগ্রামের কাছে একসময় ইংরেজ সরকার নত হতে বাধ্য হন।
গান্ধীজী ও মানবপ্রেম
মহাত্মা গান্ধী ছিলেন প্রেমের পূজারী। তিনি মানব সেবক, তরি মানব প্রেম সমাজসেবার মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছিল। তিনি হিন্দু সমাজের অস্পৃশ্যতা রূপ পাপ দূর করবার জন্য চষ্টা করে গেছেন অস্পৃশাদের তিনি নাম দিয়েছিলেন “হরিজন”।
হিন্দু ও মুসলমানদের সম্প্রীতিকে তিনি দৃঢ় করার প্রয়াস চালিয়ে গিয়েছিলেন। গ্রাম প্রধান ভারতের পুনর্গঠনের জন্যও তিনি আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। ভারতবর্ষের সাত লক্ষ শ্রীহীন গ্রামের পূর্ব গৌরব ফিরিয়ে আনার জন্য তার অবদান স্মরণীয়।
উপসংহার
গান্ধীজি সারাজীবন ন্যায়, সত্য ও সেবার আদর্শ প্রচার করে গেছেন। দুঃখের বিষয় হল যে 1948 সালের 30 শে জানুয়ারী নাথুরাম গড়সে নামে এক আততায়ীর গুলিতে তিনি প্রান হারান ৷ কিন্তু তিনি চিরঞ্জীবী। গান্ধীজি ভারতবাসীর কাছে জাতির জনক হিসাবে পরিচিত আছেন। আজও তার আরম্ভ করা কাজ সমাপ্ত হয়নি। ভারতের যতটুকু অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে, তা তারই প্রদর্শিত পথে এগিয়ে চলার ফল।
তবে এখনও অনেক পথ অতিক্রম করতে হবে। দেশ থেকে দারিদ্র্য, অশিক্ষা, বিভেদ নীতি আর সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলতে হবে। তাহলে দেশ বাঁচবে, জাতি বাঁচবে, মানব সমাজ বিপদ মুক্ত হবে। আর এই সাধনায় গান্ধীজীর জীবন দর্শন হবে আমাদের পরম পাথেয়।