গ্রীষ্মকাল রচনা | গ্রীষ্ম ঋতু রচনা | Summer Season Essay in Bengali

গ্রীষ্মকাল রচনা | গ্রীষ্ম ঋতু রচনা | Summer Season Essay in Bengali

গ্রীষ্মকাল রচনা | গ্রীষ্ম ঋতু রচনা | আমার প্রিয় ঋতু গ্রীষ্ম রচনা | Grishma Ritu Rachana | Summer Season Essay in Bengali | Grisma Reetu Bangla Rochona | Essay on Summer Season in Bangla | Grishmakal Rochona | Essay on Grishmakal in Bengali | Essay on Summer Season in Bangla


গ্রীষ্মকাল রচনা | গ্রীষ্ম ঋতু রচনা

ভূমিকা

প্রতি বছরের সূচনালগ্নে ঋতুরাজ মধুর বসন্তের বিদায় এর শেষে আগমন ঘটে গ্রীষ্ম ঋতুর। এই গ্রীষ্মের মধ্যে দিয়েই আমরা নতুন বছরকে বরণ করে নেই সাদরে। সুখকর বসন্তের পর কঠোর বৈশাখের অনুভূতি তেমন মনোরম না হলেও একথা স্বীকার করতেই হয় যে গ্রীষ্ম ঋতু রুপের নানা বৈচিত্র্যে বৈচিত্র্যময়। সর্বোপরি প্রকৃতির কাছে এই গ্রীষ্মের দান অনেক।

গ্রীষ্মের সময়সীমা

বাংলা মাসের তালিকায় গ্রীষ্মের স্থান সর্বপ্রথম। মূলত বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য এই দুই মাস মিলে হয় গ্রীষ্মকাল। ইংরেজী ক্যালেন্ডার মতে মার্চের শুরু থেকে মে মাস পর্যন্ত থাকে গরমের আধিপত। সূর্যের দক্ষিণায়নের ফলস্বরূপ দক্ষিণ গোলার্ধে থকা ভারতবর্ষে সূর্যের তাপ ক্রমশ বাড়তে থাকে। এই সময় সূর্য পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধের দিকে বেশি হেলে থাকায় প্রকৃতি উষ্ণতর হয়ে ওঠে। ভারত প্রকৃতপক্ষে উষ্ণ প্রধান দেশ, তাই গ্রীষ্ম ঋতুর রাজত্বই এখানে বেশি চলে। এই সময় দিন দীঘ ও রাত ছোট হয়।

গ্রীষ্মের প্রকৃতির রূপ

চৈত্র মাসের শেষদিক নাগাদ অর্থাৎ বসন্ত তার বিদায় ঘোষনা করবার কিছুদিন আগে থেকেই যেন শোনা যেতে থাকে রুদ্র গ্রীষ্মের পদধ্বনি। বসন্তের বাতাসে একটু একটু করে মিশতে থাকে উষ্ণতার স্পর্শ। বৈশাখের দুপুরে মধ্য গগনে বিরাজমান জ্বলন্ত সূর্য তার সম্পূন তেজ উজাড় করে ঢেলে দেয় পৃথিবীর বুকে। প্রখর রোদের তাপ এবং আলোয় পরিবেশে দেখা যায় এবল দাবদাহ। এই ভয়াবহ উত্তাপে গরমকালে জল-মাটি শুকিয়ে কাঠ হয়ে ওঠে। জলাস্তর নীচে নেমে যায়। রুক্ষতা যেন পরিবেশকে গ্রাস করে। অনেক সময় অতি গরমে দিনের পর দিন বৃষ্টির অভাবে দেখা দেয় ক্ষরা এবং তীব্র জলসঙ্কট। গরমের চোটে মানষের নাভিঃশ্বাস উঠে যাওয়ার উপক্রম হয়ে পড়ে। কিন্তু এই সমস্ত বিরুপতা থেকে স্বস্তির নিঃশ্বাস এনে দেয় কালবৈশাখী। নিম্নচাপের ফলে হিমালয়ের দিক থেকে আসা ঠাণ্ডা হাওয়া ভারত এবং তার আশেপাশে থাকা জায়গাগুলোতে প্রবেশ করে ঝড়ের সৃষ্টি করে। এই শীতল ঝোড়ো হাওয়া সন্ধ্যা সমাগত সময়ে ধেয়ে আসে। কোনো কোনো সময় বজ্রবিদ্যুৎ এমনকি শিলাবৃষ্টিপাতও ঘটায় যা কালবৈশাখী ঝড় নামে পরিচিত। এই ঝড় তীব্র গরমের পর মানুষের সাথে প্রকৃতিরও তৃষ্ণা নিবারণ করে এবং সব তপ্ততা মিটিয়ে দেয়।

READ MORE  মহাত্মা গান্ধী রচনা | Mahatma Gandhi Essay in Bengali

গ্রীষ্মের অবদান

প্রকৃতির চরমতম বিরুপতাকে সরিয়ে গরমকালে হরিৎ পৃথিবী ভরে ওঠে নানারকম মৌসুমী ফলমূলে। গ্রীষ্ম প্রধান দেশ ভারতের জাতীয় ফল আম যা এই গরমকালেই ফলন হয় এছাড়াও বিভির রসালো ফল যেমন- জাম, লিচু, তরমুজ, জামরুল, কাঁঠাল, আনারস, আঙুর এর বিপুলভাবে ফলন হয়। সবুজ বাংলায় মিষ্টি ফলের গন্ধের সাথে সাথে রঙ বেরঙের ফুলে ফুলেও গাছ ভরে যায়। এসময় জবা, গন্ধরাজ, বেল, জুঁই, টগর, কষ্ণচূড়া, চাঁপা ফুলের মনমাতানো গন্ধ আর বঙের শোভায় গ্রীষ্মকাল যেন পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। এছাড়াও বিভিন্ন সব্জী যেমন- মড়ো, পটল, লাউ, শশা, চালকমড়ো ইত্যাদি সবজীর চাষও হয় এই সময়।

উপসংহার

গ্রীষ্মধনত যা তাপ এবং দাবদাহে ভরা ছদ্মবেশে আশীবাদ। অন্যান্য ঋতুর মত গ্রীষ্মেরও রয়েছে নিজস্ব স্বাতন্ত্র্য। এই ঋতুতে সুবিধার সাথে আছে কিছু অসুবিধাও। প্রবল তাপপ্রবাহে মানুষের সানট্রোক, ডিহাইজেশন, ডাইরিয়া, আমাশয় এর মত স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন দেখা যায় তেমনই গ্রীষ্মের মরশুমে বিদ্যালয়ের গ্রীষ্মকালীন ছুটি কাটাতে অনেকে পরিবারের সাথে পাহাড় বা সমুদ্রে বেড়াতে যেতে পছন্দ করে। গ্রীষ্ম দিয়েই শুরু হয় বাংলা বর্ষ। গ্রীষ্মের প্রথম দিন আপামর বাঙালী নববর্ষ পালনে মেতে ওঠে। গ্রীষ্ম ঋতু বয়ে আনে রং এবং ত্রানের বাহার তাই তো সূর্যের প্রখর তাপধারাকে পরিশুদ্ধ করে গ্রীষ্ম স্বাগত জানায় বর্ষাকালকে। বর্ষা ঋতুর আগমনে মানুষ আবার নতুন ছন্দে মেতে ওঠে।

Leave a Comment

error: Content is protected !!
Scroll to Top